কচ্ছপ ও খরগোশের দৌড় প্রতিযোগিতা
অনেক দিন আগের কথা। এক বনভূমিতে খরগোশ আর কচ্ছপ একসাথে বসবাস করত। খরগোশ ছিল খুবই দ্রুতগামী আর আত্মবিশ্বাসী, আর কচ্ছপ ছিল ধীর-স্থির ও পরিশ্রমী। একদিন খরগোশ কচ্ছপকে ঠাট্টা করে বলল, “তুই এত ধীরে চলিস, তোকে দেখতে দেখতে ঘুম পায়! দৌড়ের প্রতিযোগিতায় তুই তো আমার ধারে-কাছেও আসতে পারবি না।”
কচ্ছপ মৃদু হেসে বলল, “দ্রুতগামী হলেই তো সবসময় জয়ী হওয়া যায় না বন্ধু। চলো, একটা দৌড় প্রতিযোগিতা করি, দেখা যাক কে জেতে।”
খরগোশ তো শুনে হেসেই কুটি কুটি! সে ভেবেই পাচ্ছিল না যে এমন ধীরজ প্রাণী কিভাবে তাকে চ্যালেঞ্জ করে। তবে খেলার মজা হবে ভেবে সে রাজি হয়ে গেল। বনের অন্যান্য প্রাণীরাও এ খবর শুনে ভিড় করল প্রতিযোগিতা দেখতে।
একটি নির্দিষ্ট দিন ও সময় ঠিক করা হলো। এক জায়গা থেকে শুরু করে বনপথ ধরে আরেক জায়গায় গিয়ে দৌড় শেষ হবে। সবার সামনে থেকে হরিণ বিচারক হিসেবে দাঁড়িয়ে ঘণ্টা বাজিয়ে দৌড় শুরু করল।
খরগোশ শুরুতেই খুব দ্রুত ছুটল। সে কচ্ছপকে অনেক পেছনে ফেলে দিল। পথে এক বড় গাছতলায় এসে খরগোশ ভাবল, “এই কচ্ছপ তো এখনো অনেক পেছনে। একটু বিশ্রাম নিই। ঘুমিয়ে নেই, পরে দৌড়ে ঠিক পৌঁছে যাব।”
সে গাছতলায় বসে আরাম করে ঘুমিয়ে পড়ল। এদিকে কচ্ছপ থামল না। সে ধীরে ধীরে, এক পা এক পা করে এগোতে লাগল। তার মুখে ছিল একাগ্রতা, আর মনে ছিল আত্মবিশ্বাস।
ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেটে গেল, খরগোশ তখনো ঘুমিয়ে। অবশেষে কচ্ছপ গন্তব্যস্থলে পৌঁছে গেল। সবাই হর্ষধ্বনি দিয়ে তাকে স্বাগত জানাল।
যখন খরগোশ ঘুম থেকে উঠল, সূর্য প্রায় অস্ত যাচ্ছে। সে ছুটে গন্তব্যে পৌঁছাল, কিন্তু দেখে কচ্ছপ ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছে এবং সবাই তাকে অভিনন্দন জানাচ্ছে।
খরগোশ লজ্জায় মাথা নিচু করল। সে বুঝতে পারল, অহংকার আর অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস সবসময় ভালো ফল দেয় না।
**নীতিকথা:** ধৈর্য, একাগ্রতা এবং নিয়মিত পরিশ্রমের মাধ্যমে যে কেউ সাফল্য লাভ করতে পারে, এমনকি যারা গতি বা সামর্থ্যে পিছিয়ে থেকেও।